বুধবার, ১ জুন, ২০১৬

আজ জাতীয় বাজেট পেশ


কৃষিপণ্যের মূল্যস্তর ঠিক রাখতে
প্রয়োজনীয় ভর্তুকি অব্যাহত থাকছে নতুন
বছরের বাজেটে। দেশীয় কৃষি
যন্ত্রাংশ উত্পাদকদের সুবিধা দিতে
আমদানিতে শুল্কহার আরোপ করা হচ্ছে।
পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য
চালের আমদানি শুল্কহারও বাড়ানো
হতে পারে।
একইভাবে অন্যান্য খাতেও কিছু সুবিধা
দিয়ে কোনো কোনো খাতে আবার
ভ্যাটের চাপ বাড়িয়ে আজ
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে দশমবারের
মতো বাজেট পেশ করতে যাচ্ছেন
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের এই বাজেটটি
মহাজোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের
তৃতীয় বাজেট। এই বাজেটে পদ্মা
সেতুসহ বড় প্রকল্পের দিকে গুরুত্ব
থাকছে। দেশীয় কোনো কোনো
শিল্পে প্রণোদনার কথা বলা হলেও
তৈরি পোশাক শিল্পে উেস করহার
বাড়ানো হচ্ছে। বিশাল ব্যয়ের চাপ
সামলাতে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির নানান
পদক্ষেপ গ্রহণ করায় বেড়েছে
বাজেটের আকারও- যা বরাবরের মতো
এবারেও বেড়ে ৩ লাখ ৪০ হাজার
কোটি টাকার মতো হচ্ছে।
বাস্তবায়নের ঝুঁকি এবারেও থাকছে।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)
বাস্তবায়নে ধীর গতি আর রাজস্ব
আদায় লক্ষ্যের চেয়ে কম হওয়া
প্রতিবছরের চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যদিও অর্থমন্ত্রী মনে করেন, অর্থনীতির
আকার বেড়েছে, ফলে বাজেটের
আকারও বাড়াতে হবে। এবারের ৩ লাখ
৪০ হাজার কোটি টাকার বাজেটকে
উচ্চাভিলাষী অভিধা দিয়ে
অর্থমন্ত্রী আগামী তিন বছর নাগাদ এই
আকার ৫ লাখ কোটিতে নিয়ে যেতে
চান।
এ জন্য অভ্যন্তরীণ অর্থায়নেই সরকারকে
মনযোগ দিতে হবে বেশি। যদিও সহজ
আদায়ের উপায় হিসেবে ভ্যাট খাত
থেকেই আদায় করবে বেশি। অবশ্য বহুল
আলোচিত নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর
পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে বিদ্যমান
ভ্যাটের হার ও আওতা বাড়ানো হচ্ছে।
অন্যদিকে আয়কর ও শুল্ক কাঠামোতেও
বেশকিছু পরিবর্তন আসছে। ফলে
উদ্যোক্তাদের উপর নতুন চাপ সৃষ্টি হতে
পারে। ভ্যাট ও আয়করে ভর করে সরকার
এযাবত্কালের সর্বোচ্চ হারে রাজস্ব
আদায় করতে চায়। মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে,
দেশীয় অর্থায়নে বড় বড় প্রকল্প
বাস্তবায়ন করা। বিশ্লেষকরা বলছেন,
আয় ও ব্যয়ের এ বিশাল বাজেট
বাস্তবায়নই মূল চ্যালেঞ্জ।
পদ্মা সেতুর বরাদ্দ
নতুন বাজেটে পদ্মা সেতুসহ
অবকাঠামো খাতের বড় দশ প্রকল্প
বাস্তবায়নে দিক নির্দেশনা থাকছে।
শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘কাঠামো
রূপান্তরে বৃহত্ প্রকল্পঃ প্রবৃদ্ধি সঞ্চারে
নতুন মাত্রা’। উচ্চ প্রবৃদ্ধির জন্য হাতে
নেওয়া সরকারের মেগা প্রকল্প
বাস্তবায়নেই বাজেটের বড় অংশ চলে
যাবে এবার।
কৃষি খাত
এবারের বাজেটেও সরকার কৃষিখাতে
ভর্তুকি অব্যাহত রাখছে। টাকার
হিসেবে বাড়ছে কৃষি খাতে ভর্তুকির
পরিমাণ। ইতোমধ্যে ভর্তুকির পরিমাণ
বাড়াবেন বলেও বিভিন্ন সময়ে
উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে কৃষি
খাতে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি
রাখা হচ্ছে।
ভ্যাটের আওতা ও চাপ বাড়ছে
বহুল আলোচিত ভ্যাট আইনটি জুলাই
থেকে কার্যকর হচ্ছে না। বহাল থাকছে
ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য
প্যাকেজ ভ্যাটও। তবে বাজেট
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নতুন আইনটি
কার্যকরে কিছুটা সময় নেওয়া হলেও
আইনটি পরবর্তীতে বাস্তবায়নের জন্য
কিছু প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের ঘোষণা
থাকবে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায়।
অন্যদিকে ভ্যাটের হার ও আওতা কিছু
ক্ষেত্রে বাড়ানো হবে। নতুন আইনে
ঢালাওভাবে সব ধরনের পণ্য, সেবাসহ
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর ১৫ শতাংশ
হারে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে।
গার্মেন্টসসহ রপ্তানি কর বাড়ছে
তৈরি পোশাক খাতসহ সব ধরনের
রপ্তানি খাতের উপর করের চাপ
বাড়তে যাচ্ছে। বর্তমানে সব ধরনের
রপ্তানির উপর শূন্য দশমিক ৬০ (০.৬০%)
শতাংশ হারে উেস কর রয়েছে। এটি
বেড়ে ১ শতাংশ হতে যাচ্ছে। এ
খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, এ
খাতের উপর কর বাড়ানো হলে
বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা সক্ষমতা
কমে যাবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন